ভৈরবী

ভৈরবী হলেন একজন হিন্দু দেবী। তিনি দশ মহাবিদ্যার অন্যতম, অর্থাৎ মাতৃদেবীর দশটি অবতারের একজন হিসেবে বর্ণিত। তিনি ভৈরবের (শিবের এক রূপ) সহধর্মিণী।

শব্দের ব্যাখ্যা

‘ভৈরবী’ শব্দের অর্থ হলো "ভয়ঙ্কর" বা "ভীতিপ্রদ"।

চিত্রবর্ণনা

দেবী মহাত্ম্যর ধ্যানশ্লোকে তার রূপ বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি লাল বস্ত্র পরিধান করেন এবং তার গলায় কাটা মুণ্ডমালার হার পরিধান করেন। তার তিনটি চোখ রয়েছে এবং তার শিরোভাগে অর্ধচন্দ্র শোভিত।

ত্রিপুরাসুন্দরী ও ত্রিপুরাভৈরবী ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত হলেও তারা ভিন্ন।

পুরাণকথা

ভৈরবী হলেন কুণ্ডলিনী ও তন্ত্রের একজন নারী সিদ্ধা বা উপাধি। একজন যোগিনী হলেন তন্ত্রের শিষ্যা বা সাধিকা। ভৈরবী হলেন সেই সিদ্ধা যিনি ৬৪ জন যোগিনীর সহায়তায় তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন। যোগিনী ৬৪ জন। এই যোগিনীরা ভৈরবীর সহায়ক নারী দেবতা। ভৈরবী হলেন এই ৬৪ যোগিনীর প্রধান অধিষ্ঠাত্রী। ভৈরবেরও ৫২টি সহায়ক শক্তি রয়েছে, যাদের ৫২ ভৈরব বলা হয়। পুরাণ ও তন্ত্র অনুসারে ভৈরবী হলেন ভৈরবের সহধর্মিণী। তন্ত্রশাস্ত্রে ৬৪ যোগিনী, ৫২ ভৈরব এবং ৫৬ কালভে একত্রে কাজ করেন।

ভৈরবীকে শুভঙ্করী নামেও ডাকা হয়, যার অর্থ হলো তিনি তার ভক্তদের, যারা তার সন্তান, তাদের কল্যাণ করেন। অর্থাৎ, তিনি একজন শুভমাতা। আবার তিনি অধার্মিক ও নিষ্ঠুরদের প্রতি হিংসা, শাস্তি ও রক্তপাত করেন, অর্থাৎ তাদের জন্য তিনি সহিংসতার জননী। বলা হয়, তিনি ভয়ঙ্কর ও ভীতিপ্রদ রূপে দেখা দিলেও তার সন্তানদের প্রতি তিনি স্নেহশীলা ও মঙ্গলময়ী জননী।

মন্তব্যসমূহ